Sunday 14 May 2017


আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে জ্ঞান দান করেন: 

জ্ঞান মহান প্রভুর বিশেষ উপহার। এই উপহার মহান পরওয়ারদিগার যাকে খুশি দান করেন। অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষে
র পার্থক্য হলো, মানুষকে আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন। অন্যান্য প্রাণীকে তা দান করেননি। পবিত্র কোরআনে জ্ঞানের মর্যাদা ও জ্ঞানীর বিশেষত্ব নিয়ে অনেক আয়াত বর্ণিত হয়েছে। কোরআন মাজিদ অবতীর্ণ হওয়ার শুরুতেই জ্ঞানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘পড় (হে নবী), তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। জমাট বাঁধা রক্তের দলা থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। সেই প্রভুর নামেই পড়, যিনি সম্মানিত। যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে। মানুষকে এমন জ্ঞান দিয়েছেন, যা সে জানত না। ’ সূরা আল-আলাক : ১-৫। অপর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞানদান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞানদান করা হয়, সে প্রভূত কল্যাণকর বস্তুপ্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান। ’ সূরা আল বাকারাহ : ২৬৯। আরও এসেছে, ‘যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য, সে কি ওই ব্যক্তির সমান, যে অন্ধ ও মূর্খ? উপদেশ তো শুধু জ্ঞানী মানুষেরাই গ্রহণ করে। ’ সূরা আর্ রা’দ : ১৯। জ্ঞানের জন্য মহান পরওয়ারদিগারের দরবারে দোয়া করতে বলা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘বলো, হে আমার প্রভু। আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও। ’ সূরা ত্বা-হা : ১১৪। যাকে মহান আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন এবং যাকে দান করেননি তারা উভয়ে কখনো সমান হতে পারে না। আল কোরআনে ঘোষিত হচ্ছে, ‘এদের জিজ্ঞেস কর, যে জানে এবং যে জানে না, এরা উভয় কি কখনো সমান হতে পারে? বুদ্ধি-বিবেকসম্পন্ন লোকেরাই তো উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। ’ সূরা আয্ যুমার : ৯। জ্ঞান না থাকলে আল্লাহকে ভয় করা যায় না। তাঁর ভয়ে কম্পমান তারাই যারা জ্ঞানী। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অনুরূপভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু ও চতুষ্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহকে একমাত্র তারাই ভয় করে যারা তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের জ্ঞান রাখে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী এবং ক্ষমাশীল। ’ সূরা আল ফাতির : ২৮। জ্ঞানী ব্যক্তির মর্যাদা আল্লাহ নিজে বাড়িয়ে দেন। পবিত্র কোরআনের অপর আয়াতে ঘোষিত হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ! মজলিসে জায়গা করে দিতে বলা হলে জায়গা করে দিও, আল্লাহ তোমাদের প্রশস্ততা দান করবেন। আর যখন চলে যেতে বলা হবে, তখন চলে যেও। তোমাদের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং (ইমানদারদের মধ্যে) যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর’। সূরা আল মুজাদালাহ : ১১। হাদিস শরিফে জ্ঞান আহরণের প্রতি ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি ইল্ম হাসিল করার জন্য কোন পথে চলে (এর বিনিময়ে) আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে যাওয়ার পথ সহজ করে দেন। (মুসলিম) অপর হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইল্ম হাসিল করার উদ্দেশ্যে বের হয় সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর পথে (জিহাদের মধ্যে) অবস্থান করে। (তিরমিযী)। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে জ্ঞানী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন। 

No comments:

Post a Comment