Sunday 14 May 2017



বিশ্ব পরিবেশ দিবস জুন দিবসটি 'আর্থ ডে' বা 'ধরিত্রী দিবস' নামেও পরিচিত

১৯৭২ সালে জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশেবিশ্ব পরিবেশ দিবসপালন করা হয়
বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য 'বন্যপ্রাণি পরিবেশ, বাঁচায় প্রকৃতি বাঁচায় দেশ।' প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হয়।
সাধারণভাবে পরিবেশ বলতে আমাদের চারপাশের উপাদানের সমষ্টিকে বোঝায়। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের দ্বারাই একজন ব্যক্তি বা প্রাণী বা জীব এমনকি উদ্ভিদ প্রভাবিত হয়ে থাকে। এই প্রভাবকসমূহের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ
বাংলাদেশের প্রকৃতির অন্যতম উপাদান বন বন্যপ্রাণি বিভিন্ন অঞ্চলের বন বন্যপ্রাণি মিলে গড়ে উঠেছে নানা ধরণের প্রতিবেশ ব্যবস্থা। গড়ে উঠেছে প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ। আমাদেরকে সচেতন হতে হবে দেশের বনাঞ্চল প্রাণিজ সম্পদ নিয়ে। কেন না বন বন্যপ্রাণি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবেশপ্রতিবেশ তথা মানুষের ওপর নেমে আসে বিপর্যয়
আজ পরিবেশ নানাভাবে বিপর্যস্ত। বন ধ্বংস, অবৈধভাবে বন্যপ্রাণি শিকার, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পকারখানার দূষণ ইত্যাদিকে দায়ী করা হচ্ছে পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হিসেবে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
পরিবেশের প্রধান উপাদান মাটি, পানি, বাতাস অন্য উপাদানের যেকোন ধরণের পরিবর্তন যা সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে সাথে সাথে কিংবা পরবর্তীতে, অল্প বা বেশি সময়ের জন্য মানুষসহ অন্য প্রাণিদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তখন তাকে পরিবেশ দূষণ বলে
বিভিন্ন দূষণের ফলে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সবাই বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়। পরিবেশ দূষণের ফলে শিশু, বৃদ্ধ হৃদরোগীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বইয়ে পড়েছি। শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বায়ু শব্দ দূষণ দ্বারা। বিশেষ করে শব্দদূষণের কারণে শিশুরা মানসিক শারীরিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শব্দ দূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হওয়া, ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এছাড়াও আমাদের দেশের বিপুল লোকসংখ্যার কারনে ও বিভিন্ন অসচেতনতার কারনে দুষণও বেশী হয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি পত্রিকায় পড়লাম একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, বায়ু দূষণে ঢাকার প্রতি চার জনের একজন শিশুর ফুসফুস আক্রান্ত। পরিবেশের উন্নতি না হলে আগামীতে সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে একথা একেবারে হলক করেই বলা যায়। বাতাসকে দূষণমূক্ত করতে কিছূ প্রতিষেধকের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আর এর প্রতিষেধক হলো ঢাকা শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বেশী পরিমাণে গাছ লাগানো। প্রতিদিনের হাজার হাজার টন নির্মাণ বর্জ্য সঠিক স্থানে ফেলা, ঢাকা শহরকে ইটের বর্জ্য থেকে মুক্ত রাখা, মেডিকেল বর্জ্য থেকে মুক্ত রাখা, প্রতিদিন রাস্তায় যে বর্জ্য ফেলছি তা থেকে মুক্ত রাখা।
আগামী দুই বছরের মধ্যে ঢাকা বদলে যাবে এমন আশা ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, "শিশুসহ সব মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য ঢাকা মহানগরকে গ্রিন ক্লিন করা হচ্ছে। এজন্য এখানে আগামী দুই বছরে ২৫ হাজার গাছ লাগানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক বছরের মধ্যে ঢাকা মহানগরের কোথাও খোলা জায়গায় আবর্জনা পড়ে থাকবে না।" নি:সন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ।
বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণ রোধ পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য ১৯৯২ সালে পরিবেশ নীতি ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং ১৯৯৭ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা তৈরি করা হয়। এই সব আইন নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ হলেই আমাদের পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এই পরিবেশটি আমাদের। তাই এর রক্ষণেরও দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে
আরও পরুন

No comments:

Post a Comment